তৌহিদ হোসেন উজ্জ্বল ,বাউফল
পটুয়াখালীর বাউফলের নওমালা ইউপির নগরের হাট বাজারে সানফ্লাওয়ার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড” নামের একটি বেসরকারি সংস্থার সদস্যদের লোন দিয়ে সাদা ননজুডিশিয়াল স্টাম্প ও ব্যাংক চেক আটকিয়ে রেখে গ্রাহকদের হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী গ্রাহক বাদী হয়ে ৫ অক্টোবর রাতে বাউফল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, বাউফল উপজেলা সমবায় কার্যালয় থেকে সানফ্লাওয়ার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড যাহার রেজিস্ট্রেসন নং ০২পিডি অনুকূলে নওমালা ইউপির নগরের হাট এলাকায় অফিস খুলে স্থানীয় মোঃ সোহরাব সরদারের ছেলে মোঃ স্বপন সরদার (৪০) চড়া ও চক্রবর্তী সূদে অসহায় ও গরিব লোকদেরকে ঋণ দিয়ে তাদের কাছ থেকে সাদা ননজুডিশিয়াল স্টাম্প ও ঋণ গ্রহিতার নামের ব্যাংক অ্যাকাউন্ড এর একাধিক স্বাক্ষরিত সাদা চেক বন্ধক রেখে লোন দিয়ে থাকে। গ্রাহকের ওই ঋনের টাকা পরিষদ হলেও দিনের পর দিন ঘুরতে হয় তাদের দেয়া স্টাম্প ও চেক ফেরত পাওয়ার জন্য। ওই সংস্থার একজন ঋণ গ্রহিতা আঃ খালেক মৃধা (৭০) জানান, তিনি ২৫/০৯/২০১৯ ইং তারিখ অত্র সংস্থা থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। ওই সময় তার কাছ থেকে বাউফল সোনালী ব্যাংক শাখার অনুকূলে ব্যাংক চেকে স্বাক্ষরিত দুটি পাতা ও ১৫০ টাকার সাদা ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্প বন্ধক হিসেবে রাখে। আমি নিয়মিত ভাবে সুদে-আসলে ৫২ হাজার টাকা পরিশোধ করি। পরে আমার দেওয়া চেক ও স্ট্যাম্প ফেরত চাইলে বিভিন্ন ধরনের তালবাহানা করতে থাকে ওই সংস্থার পরিচালক ও মালিক স্বপন সরদার।
এক পর্যায়ে গত ১ অক্টোবর আমি তাদের অফিসে গিয়ে ওই সংস্থার মালিক মোঃ স্বপন সরদারের কাছে আমার দেওয়া স্ট্যাম্প ও চেক ফেরত চাইলে বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে অফিস থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ ব্যাপারে বেশি বাড়াবাড়ি করলে ওই চেক দিয়ে আমার নামে মামলা করার হুমকি দেয়।
এ ব্যাপারে আমি ৫ অক্টোবর আইনী সহায়তা চেয়ে বাউফল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।
এ ব্যাপারে সানফ্লাওয়ার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মোঃ স্বপন সরদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন লোন দেয়ার সময় আমরা কোন চেক ও স্ট্যাম্প রাখিনা। এ ব্যাপারে আপনি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন একজন সেনা সদস্য মোঃ মোশারেফ হোসেন। আপনার যা জানার তার কাছ থেকে জেনে নেন।
এ বিষয়ে সভাপতি নামধারী মোঃ মোশারেফ হোসেন বলেন, আমি অত্র প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত কিনা আমি নিজেই জানিনা। আমি প্রায় দেড় বছর চাকুরির সুবাদে মিশনে দেশের বাহিরে ছিলাম। গতমাসে বাংলাদেশে এসেছি। আমি ওই প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত নই।
এ বিষয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের মাঠকর্মি মোঃ মিলনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাজ শুধু প্রতিষ্ঠানের লোন দেওয়া এবং লোনের টাকা আদায় করা। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মিলন বলেন, ব্যাংক সিস্টামে আমরা ১০ লাখ টাকাও লোন দিয়ে থাকি। সেক্ষেত্রে চেক ও স্ট্যাম্প সিকিউরিটি হিসেবে রাখি। আমাদের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা লোন নিয়েছে এমন গ্রাহকও অনেক আছে। আঃ খালেক মৃধা আমাদের গ্রাহক কিনা এ মুহূর্তে আমি বলতে পারব না।
এ ব্যাপারে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আল মামুন বলেন, এ বিষয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের সদস্য আঃ খালেক মৃধা বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে সাধারণ ডায়েরিভুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।###