ইব্রাহিম আকতার আকাশ
ভোলার দৌলতখান উপজেলায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মেঘনা নদীতে পড়ে নোমান (২৭) নামে এক যুবক নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় লালমোহন সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জহুরুল ইসলামকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ডিবি) মো. এনায়েত হোসেন ও ভোলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহিরুল ইসলাম কামরুল।
তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন।
তবে কতদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে তা নিশ্চিত করতেন পারেননি কমিটিতে থাকা কেউই। কমিটির প্রধান জানান, এ বিষয়ে তিনি এখনো কোনো কাগজপত্র হাতে পাননি।
নোমান নিখোঁজের ঘটনায় আজ শনিবার সকালে তাঁর পরিবার দৌলতখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
এদিকে, গতকাল পর্যন্ত দুই পুলিশ কনস্টেবলকে বরখাস্ত করে ভোলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। দৌলতখান থানা থেকে প্রত্যাহার করে ভোলা পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) স্বরূপ কান্তি পাল ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. সোহেল রানাকে।
দৌলতখান থানার ওসি জানান, ঘটনার পর থেকে ভোলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান খান (প্রশাসন ও অর্থ) ঘটনাটির প্রাথমিক তদন্তের দায়িত্বে থাকলেও শুক্রবার রাতে ভোলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে।
এদিকে, ঘটনার ৩ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো নিখোঁজ নোমানের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। যদিও তাঁর সন্ধান পেতে স্বজনরা মেঘনা নদীতে ট্রলার নিয়ে তাকে খোঁজাখুঁজি করছেন বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ২৪ নভেম্বর দুপুর ১টার দিকে জেলার দৌলতখান উপজেলার পাতার খাল মাছ ঘাট সংলগ্ন মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় নোমানসহ বেশ কয়েকজন জুয়া খেলছিল। এসময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবগত না করেই বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা নোমানদের জুয়ার আসরে গিয়ে তাদেরকে ধাওয়া করে। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মেঘনা নদীতে নোমানসহ আরো কয়েকজন পড়ে যায়। তাদের মধ্যে সবাই সাঁতরে তীরে উঠে আসতে পারলেও নোমান উঠে আসতে পারেনি। এরপরই নিখোঁজ হয় নোমান। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, নোমান নদীতে পড়ে যাওয়ার পর পুলিশ তাকে উদ্ধার না করে উপর থেকে তাকে লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করতে থাকে। তাদের ধারণা পুলিশের ইটের আঘাতে নোমান নদী থেকে সাঁতরে তীরে উঠে আসতে পারেনি।
Related