পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় বিয়ের ২০ দিনের মাথায় ফোরকান তালুকদার (২৮) নামের এক যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। নিখোঁজের ১১ দিনেও তার সন্ধান না মেলায় দিশেহারা পরিবার।
ফোরকান কুয়াকাটার দক্ষিণ মুসুল্লিয়াবাদ গ্রামের মৃত রুহুল আমিন তালুকদারের ছেলে। পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার হোটেল সি অ্যাডভেঞ্চার নামের একটি আবাসিক হোটেলে ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ১০ নভেম্বর কুয়াকাটার তুলাতলী গ্রামে বিয়ে করেন ফোরকান। ২৯ নভেম্বর শ্বশুরবাড়ি থেকে কর্মস্থলে যান তিনি। ১ ডিসেম্বর সকাল থেকে তাকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি।
হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, ওইদিন সকালে ৫ মিনিটের জন্য একটা কাজ সেরে আসছি বলে হোটেল থেকে বের হন ফোরকান। এরপর আর ফেরেননি।
হোটেল সি-অ্যাডভেঞ্চারের পরিচালক শহীদুল ইসলাম বলেন, নিখোঁজের আগের রাতে শ্বশুরবাড়িতে যাবে তাই আমার কাছ থেকে ছুটি নেয়। পরদিন খুব সকালে আবার হোটেলে আসে।
পরে রাব্বি নামের আর এক হোটেল বয়কে বলে আমি ৫ মিনিট পরে আসছি। এ বলে হোটেল থেকে বের হয়। কিছুক্ষণ পরই তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আমরাও অপেক্ষা করতে থাকি কিন্তু আসে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা তার পরিবার এবং শ্বশুরবাড়িতে খোঁজ নিয়েছি সেখানেও পাইনি। এখন পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আমাদের হোটেলে তার অবস্থানের সব সিসিটিভির রেকর্ডও আমাদের কাছে আছে।
ফোরকানের শ্বশুর মিরাজ মৃধা বলেন, নিখোঁজের আগের রাত আমাদের বাড়িতে যাবে এ কথা বলে হোটেল থেকে গেলেও সে আমাদের বাড়ি থেকে আসছে দুদিন আগে। ওইদিন রাতে আমি ফোন করলে বলে হোটেলে কাজ আছে আসতে পারবো না। এরপর থেকে আমাদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, এ ছেলে আরও তিনবছর আগেও একটি বিয়ে করেছে। কিন্তু সেই কথা আমার কাছে গোপন রেখেছে তার পরিবার। তারা সবাই মিলে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমি আইনের আশ্রয় নেবো।
নিখোঁজের দিন থেকে হন্য হয়ে ফোরকানকে খুঁজছে তার পরিবার। কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে ছোট ভাই জয়নাল বলেন, আমার বাবা নেই বড় ভাই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। সে এখন নিখোঁজ।
মা সারাক্ষণ কান্না করে, ভাইয়ের খোঁজে আমরা দিশেহারা। এরমধ্যেই সবাই আমাদের পরিবারেরকে দুষছে। আমার ভাই তিনবছর আগে আর একটি বিয়ে করলেও পারিবারিকভাবে বিচ্ছেদ ঘটে। আমার ভাইয়ের সন্ধান চাই।
মহিপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান বলেন, ৫ ডিসেম্বর মহিপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এরপর থেকেই তার মোবাইল নম্বর শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
এছাড়া বিভিন্নভাবে তাকে খোঁজার চেষ্টা করছি। তবে এখনো কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। হোটেল মালিকদের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।