তৌহিদ হোসেন উজ্জ্বল ,বাউফল
পটুয়াখালীর বাউফলের গোসিংগা গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পলি আক্তার নামের এক অন্তঃসত্তা নারীকে (২২) মারধর করা হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এক ইন্সপেক্টর এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। অন্তঃসত্তা নারীকে বাউফল স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, কোন ধরণের বকেয়া পাওনা বা নোটিশ ছাড়াই পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফল জোনাল অফিসের ইন্সপেক্টর বদরুল ইসলামের নতৃত্বে ২টি মটর বাইকে মোট ৪ জন বিদ্যুৎ কর্মী শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে বাউফল সদর ইউনিয়নের গোসিংগা গ্রামে শাহজাহান সরদারের বাড়িতে গিয়ে তার ঘরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
কোন বকেয়া ছাড়া বা নোটিশ না দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করার কারণ জানতে চান শাহজাহান সরদারের অন্তঃস্বত্তা মেয়ে পলি আক্তার । এসময় ইন্সপেক্টর বদরুল ইসলাম তার উপর ক্ষুব্দ হন এবং তর্কবির্তকে জড়িয়ে পরেন। এসময় ওই নারীর স্বামী মোঃ কাকন তাদের শান্ত করার চেষ্টা করলে ইন্সপেক্টর বদরুল ও তার সহযোগিরা তাকে কিলঘুষি মারেন। তখন অন্তঃস্বত্তা স্ত্রী পলি আক্তার বাধা দিলে তাকেও কিল, ঘুষি মারা হয়। একপর্যায়ে ইন্সপেক্টর বদরুল ইসলাম অন্তঃস্বত্তা ওই নারীকে লাথি মারলে তিনি মাটিতে পরে যান। এ ঘটনায় তার পেটে প্রচন্ড ব্যথা উঠলে তাকে দ্রত বাউফল স্বাস্থ কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
এ ঘটনার পরে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি পল্লী বিদ্যৎ সমিতির স্টাফদের বাইকের চাবি রেখে দেন। এ খবর পেয়ে বাউফল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন ঘটনা স্থালে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং বিদ্যুৎ কর্মীদের বাইকের চাবি ফেরৎ দেন। এরপর ইউপি চেয়ারম্যানের অনুরোধে বিদ্যুৎ কর্মীরা ওই অন্তঃস্বত্তা নারীর বাবা শাহজান সরদারের ঘরের পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করেন।
এব্যাপারে ইন্সপেক্টর বদরুল ইসলাম বলেন,“ ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত ভাবে ঘটেছে। ওই দিন দুপুরের দিকে শাহজাহান মিয়া নামের এক ব্যক্তি বাউফল জোনাল অফিসে এসে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। আমি ডিজিএম স্যারের নির্দেশে ৩জন বিদ্যু কর্মী নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেই। জমিজমা নিয়ে শাহজান মিয়ার সাথে শাহজান সরদারের মামলা চলে আসছিল। মূল বিষয়ের যাচাই বাচাই ছাড়া আমার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা ঠিক হয়নি। তিনি অন্তঃস্বত্তা ওই নারীকে মারধরের ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন।
বাউফল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,‘ খবর পেয়ে আমি ওখানে যাই। বিদ্যুৎ কর্মীদের বাইকের চাবি ফেরৎ দেয়া হয়েছে। শুনেছি বিদ্যুৎ কর্মীদের সাথে ঝামেলা হয়েছে। হাতাহাতি ও মারামরি হয়েছে।
এ ব্যাপারে বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন কয়েকজন বিদ্যুৎ কর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে আমি ঘটনা স্থালে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে কোন অন্তঃস্বত্তা নারীকে বা তার স্বামীকে মারধর করা হয়েছে এমন ঘটনা আমি জানিনা। কেউ অভিযোগও করেননি। অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Related