এস এম আলমগীর হোসেন, কলাপাড়াঃ
ঘূর্ণিঝড় সিডরের সেই ভয়াবহ স্মৃতি আজোও তাড়া করে বেড়াচ্ছে সাগর পাড়ের মানুষদের। উপক‚লীয় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অনেকেই নিখোঁজ হওয়া স্বামী,সন্তান,বাবা-মা কিংবা ভাইয়ের অপেক্ষায় এখনও পথ চেয়ে আছেন। ভুলতে পাড়ে নায় সেই দিনের কথা। প্রাণ হারানো মানুষের স্মৃতি নিয়ে বয়ে বেড়াচ্ছে স্বজনরা। আকাশে মেঘ দেখলেই বেড়ে চলে ছোটাছুটি। আতঙ্ক যেন পিছু ছাড়ছে না সাগর পাড়ের বাসিন্দাদের।
স্থানীয় মানুষের স্মৃতিচারণে উঠে এসেছে-সেদিন ছিলো ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা। তীব্র দমকা হাওয়ার সাথে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। আবহাওয়া বিভাগের ১০ নম্বর সতর্ক সংকেত এবং রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সিডর আঘাত হানলো উপক‚লীয় এলাকায়। মাত্র ১০ মিনিটে লন্ডভন্ড হয়ে যায় সব। ভয়াল সিডরের স্মৃতিতে এখনো শিউরে ওঠেন সাগর পাড়ের মানুষ। এখনও মহাবিপদ সংকেতের কথা শুনে আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন তারা।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, সুপার সাইক্লোন সিডরে এ উপজেলায় ৯৪ জনের মৃতু হয়েছে। আহত হয়েছে এক হাজার ৭৮ জন। এখনও নিখোঁজ রয়েছে ৮ জন জেলে। স্বজন হারাদের কাছে তাদের খোঁজ খবর নিতে গেলে বার বার কান্নায় ভেঙে পড়েন। জীবনে এই দিনটির কথা কখনোই ভুলতে পারবে না তারা ।
এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ হয় বেড়িবাঁধসহ অসংখ্য স্থাপনা, কৃষকের ক্ষেত ও মৎস্য সম্পদ। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সড়ক, বিদ্যুৎ সহ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা। ঝড় ও ঝড়ের পরবর্তী সময়ে রোগ বালাইয়ে মারা গেছে বহু গবাদি পশু।
এদিকে সিডরের পরবর্তিতে ক্ষতিগ্রস্থদের পূর্নবাসনের জন্য সরকার ও বিভিন্ন সাহায্যকারী সংস্থা ঘর ও আবাসন পল্লী নির্মাণ করে দিয়েছে।
বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা জানান, এখনও বেড়িবাঁধের বাইরে কমপক্ষে অনেক পরিবারই ঝুকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন।
তবে লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, সুপার সাইক্লোন সিডরে তার ইউনিয়নের ৮ জন জেলে নিখোঁজ হয়। এখন পর্যন্ত তাদের পরিবার খুজে পায়নি।
কলাপাড়া উপজেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি’র সহকারী পরিচালক মো.আসাদুজ্জামান খান বলেন,সিডর পরবর্তীতে এ উপজেলায় ১৭০ টি সাইক্লোন শেল্টার এবং ২০ টি মুজিব কেল্লা নির্মিত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সিডর পরবর্তি সময় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে পর্যায়ক্রমে বিভিন্নভাবে সরকারি সহায়তা দেয়া হয়েছে। তবে নতুন করে যদি কেউ আবেদন করে তাকে সাহায়তা প্রদান করা হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।