দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
দুমকী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুন অর রশীদ হাওলাদার একটি প্রাডো গাড়িতে চড়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন যা এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। কালো রংয়ের ঢাকা মেট্রো-ঘ (১৩-৪৩১২) নম্বরের প্রাডো গাড়িটি এর আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য রুহুল আমিন হাওলাদারকে ব্যবহার করতে দেখেছেন এলাকাবাসী। বিআরটিএ’র তথ্যানুযায়ী, গাড়ীটি নীলফামারীর সাবেক প্রয়াত সংসদ সদস্য কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) এ এ মারুফ সাকলানের নামে রেজিস্ট্রেশন থাকায় সন্দেহ আরও ঘণীভূত হয়েছে। প্রয়াত মারুফ সাকলান ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী ৪ আসনে মহাজোট থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০২৩ সালের সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগিতে এলাকার জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেনকে বাদ দিয়ে জাতীয় পার্টির এই নেতাকে এই আসনটি ছেড়ে দেয়া হয়। তখন স্থানীয় অনেক আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ এলাকার সাথে জনবিচ্ছিন্ন রুহুল আমিন হাওলাদারকে মেনে নিতে না চাইলেও এই দু:সময়ে পাশে দাড়াঁন বর্তমানের প্রার্থী হারুন অর রশীদ হাওলাদার।
এর প্রতিদানে একাধিক মতবিনিময় সভায় তিনি হারুন হাওলাদারের পক্ষে ভোট চেয়েছেন। এমনকী সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে জেলা আওয়ামীলীগের এক নেতা তাকে ভোট না দিলে সরকারি বরাদ্দ না দেয়ার হুমকী-ও দিয়েছিলেন। যা একাধিক স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এলাকায় আসা কমিয়ে দেন এই সাংসদ।
শুধু তাই নয়, স্থানীয় সংসদ সদস্য দুমকী উপজেলা নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রার্থী ও তার দু:সময়ের সাথী হারুন অর রশীদ হাওলাদারের পক্ষে বিভিন্নভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করে চলেছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি স্থানীয় প্রশাসনকেও নানাভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে চলেছেন। যার প্রমাণ পাওয়া যায়, ২ জুন রাতে।
স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ সূত্রে জানা যায়, গত (রবিবার) ২ জুন রাত সাড়ে ন’টার দিকে আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের রূপাশিয়া গ্রামের তালুকদার পাড়ায় জনৈক এসএম ফজলুল হকের অসুস্থ শশুরকে দেখতে যান কাপ পিরিচ মার্কার চেয়াম্যান প্রার্থী কাওসার আমীন হাওলাদার।
খবর পেয়ে হারুন হাওলাদারের শতাধিক কর্মী-সমর্থক ওই বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নানা উস্কানীমূলক শ্লোগান দেয়। এতে দু’প্রার্থীর কর্মী সমর্থকের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে চেয়ারম্যান প্রার্থী কাওসার আমীন হাওলাদার ওই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে দু’পক্ষের উত্তেজিত কর্মী সমর্থকদের সাথে হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি হয়।
এসময় নির্বাচনী দায়িত্বরত নির্বাহী মেজিষ্ট্রেট জিয়াউল হাসান ঘটনাস্থলে পৌছে দু’পক্ষের অন্ততঃ ১১জনকে আটক করেন। কিন্তু হারুন হাওলাদারের লোকজনদের ছাড়িয়ে নেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য রুহুল আমিন হাওলাদারের ব্যক্তিগত সহকারি সোহেল ও সাংসদের আজ্ঞাবহ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কালাম মৃধা। তারা দু’জন লোকজন নিয়ে গভীররাত পযন্ত থানায় অবস্থান করেন।
এই খবর বাইরে ছড়িয়ে পড়লে গণমাধ্যম কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে রাত সাড়ে ১১টায় ইউএনও কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচার বসিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় বাঁধা প্রদান, গোলযোগ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দায়ে ৮জনের প্রত্যেককে ৭দিনের কারাদন্ডাদেশ দেয়া হয়।