এস এম আলমগীর হোসেন ,কলাপাড়া
মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানিয়ে মোটরসাইকেল পথরোধ করে ৫ ঘন্টা ধরে অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে মৎস্য ব্যবসায়ীর হাত ভেঙ্গে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারনসহ পরকীয়ার স্বীকারোক্তি নেয়া হয়। তার সাথে থাকা নগদ ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সংঘবদ্ব চক্রটি। এ সময় কথিত সাংবাদিক ছগির খান ও আব্দুল্লাহ আল মামুন তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। সোমবার (১৭ জুন) রাত ১০ টার দিকে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন স্থানে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এবিষয়ে অস্ত্র মামলার আসামী মাসুম বিল্লাহসহ ৮ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নির্যাতিত মৎস্য ব্যবসায়ী হযরত আলী জানান, ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের জামাল হাওলাদারের কাছে পাওনা টাকা আনতে তিনি ও তার ফুফাতো ভাই ইয়াকুবকে নিয়ে তার বাড়ি যান। পাওনা সাড়ে তিন লক্ষ টাকা সাথে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। পূর্বপরিকল্পিত ভাবে স্থানীয় সন্ত্রাসী মাসুৃম বিল্লাহ তার দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে তাদের পথরোধ করে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। পরে অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারন ও বেদরক মারধরের মাধ্যমে জামাল হাওলাদারের মেয়ের সাথে তার পরকীয়ার স্বীকারোক্তি নেয়। এসময় তার সাথে থাকা নগদ ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। ওই সন্ত্রাসী বাহিনী তার কাছে মোট ৭ লক্ষ টাকা চাদা দাবী করে। বাকি টাকা তিন দিনের মধ্যে না দিলে বিবস্ত্র ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে।
তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসীরা তাকে রাত ১০ টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত আঁটকে রেখে মারধর করে। এতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তাক্ত, জখম ও ফুলাসহ বাম হাত ভেঙ্গে যায়। এ সময় কথিত সাংবাদিক ছগির খান ও আব্দুল্লাহ আল মামুন তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। নগদ ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায়, বাকি ৩০ হাজার টাকা না দেয়ায় ঘটনার তিন দিন পরে তার বিরুদ্ধে অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল রুপান্তরে মিথ্যে সংবাদ প্রচার করে।
তার ফুফাতো ভাই ইয়াকুব বলেন, সন্ত্রাসীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাদের পথরোধ করেন। পরে তাকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে একজায়গায় আটকে রাখে। এসময় তার ভাই আলীকে অন্য জায়গায় নিয়ে মারধর ও জোরপূর্বক পরকীয়ার স্বীকারোক্তি নিয়ে সাথে থাকা টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মাসুম বিল্লাহ বলেন, তিনি পরকীয়ার সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে যান। পরে ইউপি সদস্যদের উপস্থিতে মুসলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। তবে, মারধর ও অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট বলে জানান।
ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সোহেল জানান, সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। পরে পরিবারের সাথে কথা বলে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
ওই গূহবধু জানায়, কথিত সাংবাদিক ছগির খান ও আব্দুল্লাহ আল মামুন আমার মানসম্মান হানি করে বিভিন্ন আলনাইনে নিউজ করেছেন। এ ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
কথিত সাংবাদিক ছগির খান বলেন, তাদের আপত্তিকর ছবি আমার কাছে রয়েছে। আমি কোন চাঁদা দাবি করি নাই।
মহিপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, মামলার কপি হাতে পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Related