প্রিন্ট এর তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪, ৭:২৩ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ১৫, ২০২৪, ৮:১৩ পি.এম
বাউফলে পানি নিস্কাশনের অভাবে ৮ শত হেক্টর আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্থ
তৌহিদ হোসেন উজ্জ্বল , বাউফল
বৃষ্টি ও জোয়ারে প্লাবিত হওয়ার পরে পানি নিস্কাশনের উপায় না থাকায় অন্তত ৮ শত হেক্টরর আমনের বীজতলা বিনস্ট হয়েছে পটুয়াখালীর বাউফলের মুল-ভূখন্ড বি্চ্ছিন্ন চন্দ্রদ্বীপের উত্তর-পশ্চিম চরমিয়াজানে।
ভূক্তভোগি কৃষক-কৃষাণীরা জানায়, ঈদ পরবর্তি পূর্ণিমা লাগোয়া জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়ে চন্দ্রদ্বীপের চরমিয়াজানের শতাধিক কৃষকের অন্তত ৮হাজার হেক্টর আমনের বীজতলা ভেসে গেছে। এতে ক্ষতির মুুখে পড়েছেন স্থানীয় বেশিরভাগ কৃষক। ওইসব বীজতলা থেকে দ্রæত পানি নিস্কাশনের উপায় না থাকায় এদের কেউ আবার নতুনভাবে বীজতলা তৈরীর উদ্দেগ নিলেও চাষ মৌসুমে ২০-২৫ দিন পিছিয়ে তারা। অধিকাংশ কৃষক-কৃষাণী পড়েছেন ক্ষতির মুখে।
মিয়াজান এলাকার সাত্তার হাওলাদার (রুবেল) জানায়, বীজতলা তৈরীর পরে বাজার থেকে ১০ কেজির প্রতি প্যাকেট ১হাজার ৫০ টাকা হিসেবে বিআর ১১ জাতের বীজধান কিনে ছিটানোর পরে বৃষ্টি আর জোয়ারের পানি উঠলে নিস্কাশনের কোন উপায় না থাকায় বীজতলা বিনস্ট হয়ে যায়। ঘুঘু পাখি ও শামুকেও কিছুটা ক্ষতি হয় তার বীজতলা। অন্তত ২ মন ধানের বীজ সম্পূর্ণ নস্ট হয় তার। নতুন ভাবে আবার স্বর্ণমুশরী জাতের বীজধান কিনে বীজতলা তৈরীর উদ্দেশে বস্তাভর্তি করে পুকুরের পানিতে ভিজিয়ে প্রক্রিয়াকরণে ব্যাস্ত তিনি। চর ঘিরে বেড়িবাঁধের একটি মাত্র সুইচগেটে দুই-তিন বিলের পানি নিস্কাশন হয় না। বিলের সমতল ভূমির তুলনায় সুইজগেট উচুতে থাকায় পানি উঠলে আর নামে না। কিংবা নামলে আর ওঠে না।
প্রতিবেশি সেকান্দার রাড়ি, আব্দুস ছালাম হুজুর, কুদ্দুস মৃধা, লিটনসহ প্রায় সব কৃষকেরই একই দশা। নান্নু বাবুর্চি নামে অপর একজন জানায়, ২ মন মোটা ধানের বীজ পানিতে ভেসে যায় তার। বিলে পানি জমে থাকায় ঠিকঠাক অঙ্কুর আসলেও শিকড় ধরেনি মোকলেস চৌকিদারের বীজতলায়। বিলের পানি নামতে না নামতেই আবার বৃষ্টির কারণে ক্ষতির মুখে পড়ে তার বীজতলাও। তিনি জানায়, পুরোচরে একটা মাত্র সুইচ গেটে পানি নেমে শেষ হয় না। পানিতে প্লাবিত থাকায় স্থানীয় চাষিদের প্রায় সকলেরই আধামন, ১মন, ২মন কিংবা তারও বেশি হিসেবে বীজধান মার খায় উল্লেখ করে স্থানীয় মাসুদ, ছালাম কিংবা কামাল মাস্টার বাড়ি লাগোয়া আরও একটি ¯øুইচ বা কালবার্ড করা হলে আমন চাষে কৃষকরা ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পাবেন জানায় তিনি।
উপজেলা কৃষিঅফিস থেকে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে স্থানীয় ও উপসী জাতের প্রায় ৪০হাজার হেক্টরে আমন বীজতলা তৈরীর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আনছার উদ্দিন বলেন, ‘ক্ষতি এড়াতে কৃষকদের কলার ভেলা, বাঁশের মাচা কিংবা ঘাস-লতাপাতা ব্যাবহার করে ভাসমান বীজতলা তৈরীর পরামর্শ দেয়া হ”েছ। ২০-২৫ দিনের জন্য ব্যাবহৃত এসব ভাসমান বীজতলা তৈরী করে নি¤œ এলাকায় অনায়াসে ভাল ফল পাওয়া সম্ভব। চর মিয়াজানে আমন চাষের প্রতিকুলতা তুলে ধরে সুইচ গেট কিংবা কালবার্ড সম্পর্কে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হবে।’
Copyright © 2024 দ্বীপকন্ঠ নিউজ. All rights reserved.