প্রিন্ট এর তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪, ৭:০৭ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ অগাস্ট ১২, ২০২৪, ৯:৪০ পি.এম
পটুয়াখালী স্বৈরাচারী দুর্নীতিগ্রস্থ অবৈধ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদকের পতন
আব্দুল আলীম খান (আকাশ), পটুয়াখালী
প্রায় ছয় বছর (২০১৯ থেকে ২০২৪) সময়কাল পর্যন্ত পটুয়াখালী সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক পদ দখল করে আছে বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গাজী জাফর ইকবাল। যদিও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছয় বছরে ছয় বার নির্বাচন হওয়ার কথা কিন্তু সেই প্রক্রিয়াকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এবং সবচেয়ে বেশি মদতদাতা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেনের প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে সম্পাদকের পদে বহালতবিয়ত থাকেন এই শিক্ষক। তিনি কথায় কথায় সকল কর্মকর্তাদের সাথে ঔদ্বত্যপূর্ণ আচরণ করে, কর্মচারীদের সাথে যা ইচ্ছে তাই ব্যবহার করে এবং শিক্ষার্থীরা যখন কোন দাবি নিয়ে যেতো তাদের সাথেও ঔদ্বত্যপূর্ণ আচরণ করত। মেজাজ গরম করে কথা বলতো। তার এহেন আচরণে সকল কর্মকর্তা কর্মচারী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছিল অতিষ্ঠ। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলতো না। কারন একদল ছাত্রনামধারী অছাত্র তার বাহিনী হিসেবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন চালাতো।ছাত্রাবাসের অনেক শিক্ষার্থী তাদের শিকার।১১ আগস্ট সাধারণ শিক্ষার্থীরা আট দফা দাবি নিয়ে অধ্যক্ষ স্যারের সম্মুখে গেলে এই রুক্ষ মেজাজী শিক্ষক সম্পাদক জাফর ইকবাল তাদের সাথে আবারোও ক্ষিপ্ত হয়ে ঔদ্বত্যপূর্ণ আচরণে লিপ্ত হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তখন তার পদত্যাগের ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয়। আজ বেলা ১২.০০ টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবীর মুখে অধ্যক্ষ মহোদয় অধ্যক্ষ মহোদয় এই অবৈধ শিক্ষক পরিষদকে বাতিল ঘোষণা করে দেন। এর আগে একাধিকবার কর্মকর্তারা মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিকে বাতিল করার দাবী জানালেও অধ্যক্ষ মহোদয় তোয়াক্কা না করে তিনি এই কমিটিকে নিয়েই বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকেন।
এই স্বৈরাচারী সম্পাদক অধ্যক্ষের সাথে হাত মিলিয়ে সাধারণ কর্মকর্তাদের সাথে কোন প্রকার আলাপ-আলোচনা ছাড়া এবং সরকারি অনুমোদন ছাড়া পটুয়াখালী সরকারি কলেজের চতুর দিক থেকে ৭ ফিট জায়গা পৌরসভার অধীনে দিয়ে দেন। কলেজের চতুর্দিকে পুরানো বাউন্ডারি ওয়াল ছিল সেগুলির ইট গুলো রাতের আঁধারে বিক্রি করে খেয়ে ফেলে। এই পরিষদের সদস্য বাংলা বিভাগের জনাব সেলিম হোসেন এর নামে কলেজের অফিস কর্মচারীদের যোগসাজশে বিশাল ফরমপূরণ বানিজ্যের অভিযোগ শোনা যায়। এই শিক্ষক ছাত্র হোস্টেলের তত্ত্বাবধায়ক (২০২১থেকে ২০২৪) থাকাকালীন সেখানে ডাইনিং রুমে ছাগল পালন করেন বহিরাগতরা। একাধিক সূত্র থেকে প্রমানিত।এখন আবার তিনি ছাত্রী হোস্টেলের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব নিয়েছে।বার বার তাকে বিভিন্ন কমিটিতে দেয়া হয় সেই প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার দাপট দেখিয়ে।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শিক্ষক পরিষদ বিভিন্ন পরীক্ষার ২% টাকা গ্রহণ করে এবং শিক্ষকদের চাঁদা গ্রহন করে তাতে প্রতিবছর প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা শিক্ষক পরিষদে জমা হয় কিন্তু এই টাকা ছয় বছরে কোন প্রকার হিসাব কোন সদস্যকে দেওয়া হয়নি।মূলত: এই টাকা খরচ করার কথা শিক্ষকদের স্বার্থে। প্রতি বছর একটি করে নৈশভোজ, আনন্দ ভ্রমনে সাবসিডি, শিক্ষকদের ভিতরে বার্ষিক সাহিত্য -সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিত,ফুটবল ভলিবল খেলার আয়োজন, পুরস্কার বিতরণ সিনিয়র শিক্ষকরা যারা অবসরে যান তাদের বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা এসব কাজে ব্যয় করার কথা।কিন্তু এই ছয় বছরে এই পরিষদ শুধুমাত্র দুইবার ডিনারের আয়োজন করেছে তাও অধ্যক্ষ স্যারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে।আর কোন কিছুই করেনি। ছয় বছরে প্রায় ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকার তশরুফ করেছে এই দুর্নীতিগ্রস্ত সম্পাদক। অধ্যক্ষ মহোদয় স্বল্প সময়ের মধ্যে গনতান্ত্রিক উপায়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষক পরিষদের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করবে এই দাবী সকল কর্মকর্তার।
One attachment • Scanned by Gmail
Copyright © 2024 দ্বীপকন্ঠ নিউজ. All rights reserved.